সোলায়মান আহমেদ, চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় পান চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় পান চাষের দিকে ঝুঁকছেন অধিকাংশ কৃষক। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও টানা ভারি বর্ষণে প্রতি বছরই পান চাষিদের বিপাকে পড়তে হয়। উপজেলাটি তে বহু বছর পান চাষ করে লাভবান কৃষক।
হাইমচর উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে নিজ উদ্যোগে পান চাষ করে সফলতা পাচ্ছেন স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকরা। একর প্রতি পানের বরজে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ করে প্রতি বছর লাভ করছেন ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। তবে এ জেলায় কোনো সংরক্ষণাগার না থাকায় বিপাকে পড়তে হয় এখানকার পান চাষিদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় প্রায় ৪’শ হেক্টর জমিতে ১ হাজার ৬’শ ২০টি বরজে পান চাষ করে কৃষক। স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে পানের বরজে মাটির আইল, বেড়া, ছাউনি, শ্রমিক, পানের লতা ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ লাখ টাকার খরচ হয়। বৈশাখ থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত পানের ভরা মৌসুম। ভাদ্র থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত পানের উৎপাদন হয় কম।
হাইমচর উপজেলায় সবচেয়ে বড় পানের পাইকারী বাজার বসে। সোমবার ও বৃহস্পতিবার ডেলের বাজার হলো সর্ববৃহৎ পানের পাইকারি হাট। ব্যবসায়ীরা এখান থেকে পান কিনে দেশের বিভিন্ন জেলায় পানের চাহিদার যোগান দেন।
৩ নং দক্ষিণ আলগী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সরদার নুরে আলম জিকু বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পান চাষ করে সবাই লাভবান হতে পারতো। এখানে পান চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ডেলের বাজার, কাটাখালী,পশ্চিম চর কৃষ্ণপুর ও দক্ষিণ আলগী সহ প্রতিটি এলাকায় বাড়িতে পান চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন কৃষকরা। ডেলের বাজারের পান বাজারে অন্যান্য উপজেলা থেকেও পান বিক্রি করতে আসেন কৃষকরা। তবে প্রয়োজনীয় পুঁজির অভাব ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় পানের বরজের প্রসার ঘটাতে পারছেন না বলে জানান, স্থানীয় কৃষক সরদার নুরে আলম জিকু।
২নং উত্তর আলগী ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেন দুলাল পাটোয়ারী জানান, এখানকার উৎপাদিত পান সু-স্বাদু হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা এবং দাম বেশি। পান চাষকে ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতক জীবনযাত্রার মান বদলে যাচ্ছে। স্থানীয় পান চাষিদের দাবি প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা ও প্রশাসনের পৃষ্ঠপেষকতা পেলে এখানকার উৎপাদিত পান রপ্তানি করে জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখা সম্ভব।
হাইমচর উপজেলা কৃষি কর্মকতা দেব্রত সরকার বলেন, আমাদের মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মচারিরা পান চাষে রোগবালাই ও ঝুঁকি কম থাকায় সবসময় কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আধুনিক পান চাষে ও বিভিন্ন দূর্যোগ মুহূর্তে আমরা সবসময় কৃষকদের পাশে আছি এবং থাকবো।