কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
ছুটির দিনে কক্সবাজারে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় করোনা মহামারির কারণে সাড়ে চার মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর গত ১৯ আগস্ট থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। দীর্ঘদিন পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে পর্যটন রাজধানী খ্যাত কক্সবাজার।
শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) সপ্তাহের ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে সৈকতে পর্যটকের ভিড় ছিলো চোখে পড়া মত। চিরচেনা রুপে ফিরেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। তবে কোথাও নেই স্বাস্থ্যবিধির বালাই। পর্যটক থেকে শুরু করে সৈকতের ব্যবসায়ীরা মানছেন না করোনার সরকারি বিধি-নিষেধ।
উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয়রা। পর্যটনের ওপর নির্ভর করে যারা নানাভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা বিগত দিনের ক্ষতি পোষানোর স্বপ্নে বিভোর। আর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ না হলে আগামী কয়েক মাসে ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পর্যটকের ওপর নির্ভরশীল সৈকতের ফটোগ্রাফার, জেড স্ক্রি চালক ও হকার— দীর্ঘদিন পর হলেও সৈকতে পর্যটক বাড়ায় কিছুটা স্বস্তি এসেছে তাদের মধ্যে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক ডা. হারুন রশীদ বলেন, ‘করোনার কারণে অনেকদিন ধরে কোথাও যাওয়া হচ্ছিল না। পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়াতে সপরিবারে কক্সবাজার আসলাম। কিন্তু এত মানুষ হবে যে ধারণা ছিল না। তবে দীর্ঘদিন পর এমন দৃশ্য দেখে বেশ ভালই লাগছে।’
ঢাকার মিরপুর থেকে সপরিবারে আসা একরামুল হক বলেন, ‘অনেক দিন কক্সবাজারে আসব আসব বলে আসা হয়নি। করোনা পরিস্থিতির কারণে সবকিছু বন্ধ ছিল। অবশেষে সৈকত খুলে দেওয়ার খবর শুনে ছেলে-মেয়েদের একটু ভ্রমণে আনলাম। অনেক দিন পর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মুখ দেখে তারা অনেক খুশি। বলতে গেলে আমার ছেলে-মেয়েরা বিচ থেকে উঠতে চাচ্ছে না।’
সৈকতে পর্যটকের চাপ বাড়ায় তিনটি পয়েন্টে টহল ও টাওয়ার বসিয়ে সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা।
লাইফ গার্ড কর্মী ওসমান গনি বলেন, ‘সমুদ্র সৈকত খুলে দেওয়ার পর থেকে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়েছে। তবে বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে সৈকতে পর্যটকের ভিড় বেশি হয়। সব পর্যটকদের নিরাপত্তা জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
পর্যটনের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এত মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাটাও কঠিন। তবুও চেষ্টা করছি মেনে চলার জন্য। তবে সবসময় মেনে চলাটাও সম্ভব হয়ে উঠে না। মুখে কতক্ষণ মাস্ক লাগিয়ে রাখা যায়। বেশিক্ষণ রাখলে মনে হয় ধম বন্ধ হয়ে আসছে।’
তবে পর্যটক আগমন বাড়ায় স্বস্তিতে হোটেল মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস মালিকরা। তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তারা হোটেল পরিচালনা করছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পর্যটকদের সব সেবা ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে সচেতন করা হচ্ছে। পর্যটন স্পটের সব মুখে বিচ কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে মাস্ক ব্যবহার করতে মাইকিং করা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যদের কয়েকটি টিম পর্যটন এলাকায় টহলে রয়েছে। সৈকতে পুলিশ বক্স থেকে সবসময় মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনুরোধ করা হচ্ছে।