মোঃ নাজমুল হুদা, রংপুর বিভাগীয় প্রধানঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে যৌতুকের টাকা না পেয়ে ববি আক্তার সাথী (২১) নামের এক গৃহবধূর উপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে তার স্বামীর বাড়ির লোকজন। গুরুত্বর আহত গৃহবধূ নয় মাস বয়সের ছেলে সন্তানসহ উপজেলা হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
যৌতুকের টাকা না পেয়ে তাকে বেধরক মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেন তার শাশুড়ী ও মামা শশুরেরা। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের চাচিয়া মীরগঞ্জ গ্রামে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
ববি আক্তার সাথী ওই গ্রামের মৃত জবেদ আলীর ছেলে আরিফুল ইসলামের স্ত্রী ও একই গ্রামের বুলু মিয়ার মেয়ে। ৯ মাস বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে তার।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয় তাদের দু’জনের। যৌতুক ছিলো ২ লক্ষ টাকা। বিয়ের পর থেকেই স্বামী আরিফুল ইসলাম, শাশুড়ী আঞ্জুয়ারা বেগম, নানী শাশুড়ী রাশেদা বেওয়াসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন ববি আক্তার ও তার পরিবারকে যৌতুকের চাপ দিয়ে আসছিলেন। দিতে না পারায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলে তাঁর উপর।
এমতাবস্থায় ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর সাথীকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তার স্বামীর বাড়ির লোকজন। তখন তার কোলের বাচ্চার বয়স ছিলো ২২ দিন। সেই থেকে শিশু বাচ্চাসহ বাবার বাড়িতেই ছিলেন ববি আক্তার।
পরে স্থানীয়ভাবে এক শালিসি বৈঠকে তাকে তার স্বামীর বাড়িতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সে সিদ্ধান্তকেও অমান্য করেন স্বামী আরিফুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন। পরে কোনো উপায় না পেয়ে ববি আক্তার দীর্ঘ আট মাস পর গত ২৫ আগস্ট স্বামীর বাড়িতে যান। এসময় স্বামী আরিফুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হন এবং সেই থেকে আত্নগোপনে আছেন।
অমানবিক নির্যাতন সহ্য করে সেখানে অবস্থান করছিলেন সাথী। পরে সর্বশেষ গত শুক্রবার (২৭ আগস্ট) রাতে আবারও চলে তার উপর অমানবিক নির্যাতন। এক পর্যায় তাকে বেধরক মারপিট শেষে বাড়ি থেকে বের করে দেন শাশুড়ী, নানী শাশুড়ী ও মামা শশুরেরা।
নির্যাতিতা ববি আক্তার সাথী জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকা দাবি করে আসছিলেন তার শশুর বাড়ীর লোকজন। এ নিয়ে এর আগেও অনেক নির্যাতন চালিয়েছে তার উপর।
সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে শাশুড়ী আঞ্জুয়ারা বেগম, নানী শাশুড়ী রাশেদা বেওয়া ও মামা শশুড় সাজু মিয়া, রিয়াজুল ইসলাম ও জাহেদুল ইসলামসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন তাকে বেধরক মারপিট করেন। পরে কোলের শিশু বাচ্চাসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ঘটনার দিন থেকেই আত্নগোপনে আছেন তার স্বামী আরিফুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জানতে তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লেবুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।