আবু সুফিয়ান শান্তি, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুরে ইরি বোরো ধান লাগানো নিয়ে গ্রামে গ্রামে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক কৃষাণীরা।কেউ বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন।কেউবা আবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত রয়েছেন। এ দৃশ্য দেখা যাচ্ছে,কোটচাঁদপুর এর ধান চাষের এলাকাগুলোতে,কৃষকের কাছে হার মানছে মাঘের শীত,লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বোরো ধানের আবাদ।গত কয়েক দিন ধরে হঠাৎ করেই বেড়েছে কুয়াশা ও শীতের দাপট। অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় জনজীবনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। সকালে দেরি করে খুলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সন্ধ্যার পরপরই অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হওয়ায় চারপাশ হয়ে যাচ্ছে জনমানবহীন। কিন্তু যারা মাঠে সোনা ফলাবেন তাদের স্থাবিরতা নেই। হাড়কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাকডাকা ভোরে মাঠে নেমেছেন গ্রামের কৃষকরা। শীত সব সময় তাদের কাছেই যেন হার মানে।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫৫৫৫ হেক্টর ধরা হয়েছে। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা তাদের।(০৯-ফেব্রুয়ারি) বুধবার সরজমিন উপজেলায় ঘুরে দেখা যায় কোটচাদপুর পৌরসভার এলাকার প্রজেক্ট মোড় থেকে বলুহর ইউনিয়নের রাস্তার দুপাশে তাকালেই চোখে পড়ে ভোরবেলায় প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার মধ্যেও কৃষকরা দলবেঁধে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। কৃষক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন,শীতের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে চলবে।আমরা এ সময়ে বসে থাকলে পরিবার ও দেশের মানুষের পেটে ভাত জুটবে কিভাবে।তিনি আরো বলেন, আমরা বসে থাকলে সমস্যা শুধু আমদের হবে না,গোটা দেশের সমস্যা হবে। মাঠের পর মাঠ ফসল না লাগালে মানুষ খাবে কী।বেলা দশ টার দিকে বিদ্যাধরপুর মাঠে বোরো ধানের চারা নিয়ে যাচ্ছিলেন মিন্টু ও দানেচ নামের দুই কৃষক। তারা বলেন, শুনেছি মাঘের শীতে নাকি বাঘ কাঁপে। মাঘের শীত শুরু হয়ে গেছে। বিকেল থেকেই কুয়াশা শুরু হয়। রাতে টিনের চালে টুপটাপ শব্দে বৃষ্টির মতো ঝরে কুয়াশা। সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে গেলেও কুয়াশাচ্ছন্ন থেকে যায় চারপাশ। তবে কুয়াশ বা শীত আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। তারা আরো বলেন, প্রাকৃতিক বির্যয়ের সম্মুখীন না হলে কদিন পরেই মাঠের পর মাঠ হয়ে যাবে সবুজ ধান ক্ষেত। তার পর সোনার ফসলে শুরু হবে হাসির ঝিলিক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মহাসিন আলী জানান, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বোরো ধান রোপণের ধুম পড়েছে। চলতি মৌসুমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫৫৫৫ হেক্টর ধরা হয়েছে। তবে এবার সরিষা,মসুর ও গম আবাদ কম হওয়ার কারণে চাষিরা বোরো আবাদে ঝুঁকেছে এবার।